আজ রোববার বিশ্ব মাসিক স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে দৈনিক আমাদের সময়ের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ অভিমত জানান।
সাধারণত কত বছর বয়সে পিরিয়ড শুরু হয় ?
ডা. রুমা সেন গুপ্ত: প্রতিমাসে মেয়েদের মাসিক হওয়া একেবারে স্বাভাবিক ব্যাপার। আগে ছিল ১২ বা ১৩ বছর বয়সে প্রথম মাসিক শুরু হতো। তবে এই সময়টা এখন একটু এগিয়ে এসেছে। এখন ৯ বা ১০ বছর বয়সে প্রথম মাসিক হয়।
সাধারণত কতদিন পিরিয়ড চলে ?
ডা. রুমা সেন গুপ্ত: এটা তিন-চার দিন বা অনেক সময় সাতদিনও থাকে। এটা বডির স্বাভাবিক একটা ঘটনা। প্রতি মাসে মাসিক হচ্ছে তার মানে আমরা বুঝি, একটা মেয়ের হরমোনের সব ব্যাপার, শরীরের গঠন সব কিছু স্বাভাবিক অবস্থায় আছে।
মাসিকের সময় কেন ইনফেকশন হয়?
ডা. রুমা সেন গুপ্ত: এই সময়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা খুবই জরুরি। হাইজিন মেইনটেইন করাটা এতোটা জরুরি যে, এটা যদি না করা হয়, তখন ইনফেকশন করা শুরু হয়। তার জন্য পরবর্তীতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা গ্রামে খুব একটা নেই। অনেক জায়গায় এখনো স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করে না। কাপড় বা অন্য জিনিস ব্যবহার করা হয়। তাতে ইনফেকশনটা ছড়ায়।
মাসিকের সময় কেন তলপেটে ব্যথা হয়?
ডা. রুমা সেন গুপ্ত: বডির কিছু রিডাকশনের কারণে তলপেটে ব্যথা হয়। এই ব্যথাটা স্বাভাবিক ঘটনা। আবার এই ব্যথাটা অন্য কারণেও হতে পারে। তবে কিছু ব্যথা অস্বাভাবিক হয়, পুরো মাসিক-জুড়ে ব্যথা হয়। এটা কম বয়সী মেয়েদের বেশি হয়। একে বলা হয় এন্ডোমেট্রিয়োসিস। এই এন্ডোমেট্রিয়োসিসে অনেক বেশি ব্যথা হয়। এই অস্বাভাবিক ব্যথা হলে আমরা ধরে নিই অন্য সমস্যা আছে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সমস্যা চিহ্নিত করে চিকিৎসা করা হয়।
কেন মাসিক অনিয়মিত হয়?
ডা. রুমা সেন গুপ্ত: যে বয়সে প্রথম মাসিকটা শুরু হলো তার থেকে দু বছর পর্যন্ত একটু অনিয়মিত মাসিক হতে পারে। এটা নিয়ে খুব বেশি চিন্তার কারণ নেই। অনেক সময় সবাই ভাবে বেশি বেশি রক্ত বেরিয়ে যাওয়াই ভালো। এতে অনেক সময় রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। মাসিক তিন থেকে পাঁচ দিন পর্যন্ত থাকতে পারে। কিন্তু পরিমাণ রক্ত গেল, আমি দুর্বল হয়ে যাব না। এই বিষয়গুলোর ব্যাপারে সচেতন দরকার। অনেকে ভাবে ব্যথা তো হবেই, ব্যথা হচ্ছে বলে আমরা এটা সহ্য করি। কিছু ব্যথা স্বাভাবিক, তবে সব ব্যথা না। অনেক মেয়ে বাইরের খাবার খাওয়ার জন্য মোটা হয়ে যায়, ওজন বেড়ে যায়, থাইরয়েড বা অন্য হরমোনাল সমস্যা হয়। এ ক্ষেত্রে তাদের মাসিক অনিয়মিত হয়।
মাসিকের সময় অনেকে ট্যাম্পন বা কাপ ব্যবহার করে। এ বিষয়ে আপনার অভিমত কি?
ডা. রুমা সেন গুপ্ত: মাসিকের সময় সচেতনতার বিষয়ে তিনি বলেন, স্যানিটারি প্যাড সব সময় প্রচণ্ড দরকার। প্যাড পুরো ভিজে না গেলেও চেঞ্জ করা, নিয়মিত সময় পর পর পরিবর্তন করা দরকার। অনেকে এখন ট্যাম্পন বা কাপ ব্যবহার করে। এটা খুব একটা হাইজিনিক ব্যাপার না। যারা একটু ধনী পরিবার থেকে আসে, তারা এগুলোর দিকে ঝোঁকে। তবে আমরা এগুলোকে সাজেস্ট করি না। কারণ এগুলো সচেতনভাবে ব্যবহার করতে হয়। তা না হলে এগুলো থেকে ইনফেকশন হওয়ার ঝুঁকি থাকে। স্যানিটারি প্যাডটাই বেস্ট।